"অনলাইনে টিকেট কেটে তা কাউন্টারে হার্ড কপি নেওয়া বাধ্যতামূলক" জানিয়ে আদেশ জারি করায় সুবিধা এবং অসুবিধা সমুহ-

⭕ সুবিধা
✳️
একই টিকেট ডাবল হওয়ার সম্ভাবনা থাকছেনা, যার কাছে কাউন্টার টিকেট শুধু
মাত্র সে ভ্রমণ করিতে পারিবেন এবং নকল টিকেটে ভ্রমণের সুবিধা থাকছেনা (যদিও
এটা ভেরিফাই করা যায়) । এ ছাড়া আমি আর কোন সুবিধা দেখিনা।
⭕ অসুবিধা
✴️ ২০ টাকা বেশি দিয়ে টিকেট ক্রয় করে সেই লাইনেই দাড়াতে হচ্ছে!
✴️ যাত্রার ১৫ মি আগে প্রিন্ট না করলে তা আর প্রিন্ট করা যায়না 🤔,
তাহলে বিমানবন্দর ও জায়দেবপুরের যাত্রীরা কি করবেন? কারন এই দুই স্টেশনে
৯০% ট্রেনের টিকেট হয় কমলাপুর থেকে (ওই সময় কাউন্ট করা হয়), তাহলে মানুষ কি
যাত্রার ১.৫ থেকে ২ ঘন্টা আগে এসে প্রিন্ট নিয়ে বসে থাকবে? তাহলে
ই-টিকেটিং এর সুবিধা থাকল কোথায়?
✴️
ট্রেন যদি লেট হয়, যেমন ধরুন সকাল ৮ টার ট্রেন কোন কারনে আজকে দুপুর ১২
টায় ছাড়বে। আমার বাসা স্টেশন থেকে প্রায় ১০ কিলো দুরে। তাহলে এই ১৫ মি আগে
প্রিন্ট করার জন্য আমি কি সকালে সাড়ে ৭ টায় এসে প্রিন্ট নিয়ে দুপুর ১২ টা
পর্যন্ত স্টেশনে অপেক্ষা করব? 😅 বলতে পারেন ডিলে হবে জানবে কি ভাবে? তাহলে জিপিএস ট্রাকিং সিস্টেম কি করতে আছে? আর আমরা রেলফ্যানরাই বা কি করতে আছি???
✴️ আমি যাব পার্বতীপুর থেকে ঢাকা নীল সাগরে পার্বতীপুর থেকে সীট নাই, পাইলাম চিলাহাটী থেকে যেখানে ট্রেন ছাড়ে রাত ৮ টায়, পার্বতীপুরে রাত ৯ টা ৪০. চিলাহাটীর টিকেট কাটলাম, ওটা প্রিন্ট নেওয়ার শেষ সময় রাত ৭ টা ৪৫. তাহলে আমি রাত ৭:৩০ টায় পার্বতীপুর আসব এবং আসার পরে প্রিন্ট নিয়ে মাত্র ২ ঘন্টা ১০ মিনিট বসে বসে মশা মারব! না মেরে কি করা, ডেঙ্গু আর চিকুনগুনিয়ার ভয়!
✴️ যাব ঢাকা, বাড়ী আমার চিরিরবন্দর স্টেশনের কাছে। কাউন্টার CNS এর আওতাধীন নয় সুতরাং ওই স্টেশনে বরদ্দ হওয়া টিকেট ছাড়া অন্য স্টেশন থেকে বরাদ্দ থাকা টিকেট আমি কাউন্টর থেকে নিতে পারবনা। গিয়ে শুনি সীট নাই সব সেল। এবার আমি অনলাইনে দিনাজপুর বা পঞ্চগড় থেকে সীট পেয়ে টিকেট কাটলাম। আমি তাহলে এই প্রীন্টটা কই নিব? চিরিরবন্দর স্টেশনের কাছে বাড়ী হওয়া কি আমার জন্য পাপ হইল? আমি অনলাইনে টিকেট কাটলে তো কোন ভাবেই চিরিরবন্দরে উঠতে পারবনা কেননা প্রিন্ট চিরিবন্দরে হবেইনা কেননা CNS নাই। আমাকে এখন পার্বতীপুর যেতে হবে বা দিনাজপুর সেটাও টিকেট কাটা স্টেশনে ট্রেন ছাড়ার সময়ের ৩০ মি পূর্বে? যদি বলেন যে তাহলে পার্বতীপুর থেকে কাটেন, ট্রেনে এসে প্রিন্ট নিবেন, আচ্ছা তাহলে ট্রেন কি ছাড়ার সময়ের ১৫ মি আগে পার্বতীপুর পৌছাবে আর আমি প্রন্ট নিতে পারব? আর রাতের ট্রেন হলে তো আমার পক্ষে ভ্রমণ আর সম্ভবই হইলনা! বসার কাছে স্টেশন অথচ কি বিড়মনা!
✴️ স্টেশনে আসলাম কিন্তু কারেন্ট নাই, সেই ঝড় বৃষ্টি, বিদ্যুতের ১০ টা খুটি উপড়ে গেছে, ১৫ মি এর চেয়ে কম সময় হয়ে গেলেও কারেন্টের পাত্তা নাই, শুনলাম ২ দিনেও কারেন্ট আসবেনা! তখন আমি কি করব! প্রতিটা স্টেশনে তো আর জেনারেটর সুবিধা নাই!
✴️ স্টেশনে আসলাম স্টাফ নাই, চা পান করতে, বিড়ি খাইতে, ভাত খাইতে বা হালকা হতে গিয়েছে। সে আসতে আসতে আমার ১৫ মি পার! এখন আমি কি করব?
✴️ আবার যে সব স্টেশনে কাউন্টার কম অথচ যাত্রী বেশি যেমন জয়দেবপুর, পার্বতীপুর। এখানে যাত্রী কত সহজে ট্রেন ছাড়ার আগে টিকেট প্রিন্ট করতে পারবেন?
আমাদের ই সেবা এপস এ টিকেট ভেরিফাই করা অপশন আছে, সেটা টিটিইরা ব্যবহার করতে পারতেন। কিন্তু সমস্যা হল মান্ডাত আমলের কিছু স্টাফ নিয়ে যারা এন্ড্রোয়েট চালাতেই পারেননা, তাদেরকে অন্য পোস্টে দিয়ে ইয়ংদেরকে নিয়োগ দেওয়া যায়না?! যাই হউক, সবাইকে ছোট ট্রেনিং দিয়ে QR কোড স্ক্যান করাটা শেখালে কি ভাল হইতনা? আর নিয়ম করা দরকার ছিল QR কোডে যার ফোন নাম্বার থাকবে এবং তিনি ভ্রমনে সেটা ভেরিফাই করতে পারেন তাহলে সে টিকেটের অরজিনাল যাত্রী বলে বিবেচিত হবে সাথে সাথে স্ক্যানের সাথে অটোমেটিক ভাবে ভেরিভাই হবে টিকেটটা আসল না নকল, এই সিস্টেমটা একটু খাটলেই ডেভেলপ হইত। বাকী কেউ দাবী করলে তাকে বিনা টিকেটের যাত্রী বলে বিবেচনা করা হবে।
যেটাই বলেন, এই সিস্টেমে অনেক সমস্যা হবে কেননা বাংলাদশে ট্রেন সবসময় রাইট টাইম হয়না এবং কেউ টিকেট কেটে একদিন প্রীন্ট ও একদিন যাত্রা করতে চাইবেননা যারা দুরে থাকেন। ডিজিটাল করতে গেলে সব ডিজিটাল করতে হবে। এভাবে রেলওয়ে ডিজিটাল হবেনা কোন দিনেও।
আমার মনে হয় যারা এই সিদ্ধান্তে একমত হয়েছেন তাদের অনেকেই এন্ড্রোয়েট ভাল ভাবে চালাতে পারেননা, এমনকি CNS সম্পর্কে জানা, ট্রেনের টাইমিং, যাত্রীর টিকেট কাটার ন্যাচার সম্পর্কেও বেশি একটা খোজ রাখেননা। যদি রাখতেন তাহলে তো এত বড় ইরোর হওয়ার কথা নয়! 🤥
ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন, আমরা সেবা চাই, হয়রানী নয়।
আর যদি দায়িত্বে থাকা কারও চোখো আমার লেখাটি পড়ে, দয়া করে ভেবে দেখবেন। কাউন্টারে প্রিন্ট বাধ্যতামূলক করেন কিন্তু এই ১৫ মিনিটের নিয়ম পাল্টান এবং এটা যেন আমি ট্রেন ছাড়ার ১ মি আগে ভাল ভাবে হাতে পাই সে ব্যবস্থাও করেন। আর যদি প্রিন্ট না পাই তাহলে তার দায়িত্বও রেলওয়েকে নিতে হবে আর সেটা হতে পারে এমন যে অনলাইন টিকেট ট্রেনেই ভেরিফাই করা এবং এটাই একমাত্র ভাল উপায়, এর বিকল্প নেই যার কিছুটা উপরে বলেছি য়ে কি ভাবে এটা ডেভেলপ করা যায়।
বি: দ্র: লেখার মধ্যে কোন ভূল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
No comments